রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ০৪:০৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ঐতিহ্য রক্ষায় সাইকেল র‍্যালি,  কানসাট রাজবাড়ি সংস্কারে জোর দাবি চাঁপাইনবাবগঞ্জে পাগলা নদীতে ভাসছিল অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার, গলায় বাঁধা বালুর বস্তা চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৮ দফা দাবিতে ট্রেন অবরোধ শিবগঞ্জে সড়ক দূর্ঘটনার গুরুতর আহত-২ শিবগঞ্জে প্রতারণার ফাঁদে ৭০ নারী,প্রলোভন দেখিয়ে ১০ লাখ আত্মসাৎ ! নারী খাদ্য পরিদর্শককে লাঞ্ছিতের অভিযোগ বিদায়ী উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শিবগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতার হামলায় স্বেচ্ছাসেবক দল কর্মীর আহত  সাবেক ডিআইজি নুরুল ইসলামের সহযোগী আল-মামুন আটক শিবগঞ্জে নিখোঁজ হওয়া সন্তানকে ফিরে পেতে মায়ের আর্তনাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে ডিএনসির অভিযানে ১৩০ গ্রামের হিরোইন ও নগদ ৬৩ হাজার ৪১০টাকাসহ এক চোরাকারবারি আটক

জনতার হাতে গণধোলাইয়ের শিকার সাব-রেজিস্টার ইউসুফ আলী এবার শিবগঞ্জের ইউএনও-কে প্রধান আসামী করে আদালতে মামলার আবেদন করলেন 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলা সাব-রেজিস্টার ইউসুফ আলীর উপর হামলার ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) প্রধান আসামী করে মামলার আবেদন করেছেন আহত সেই সাব-রেজিস্টার। মঙ্গলবার (০৭ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উপস্থিত হয়ে এই মামলার আবেদন করেন, সাব-রেজিস্টার ইউসুফ আলী। এতে শিবগঞ্জ ইউএনও আবুল হায়াতসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনকে আসামী করা হয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের শিবগঞ্জ আমলী আদালতে সশরীরে উপস্থিত হয়ে এই মামলার আবেদন করেন সাব-রেজিস্টার ইউসুফ আলী। এতে ইউএনও আবুল হায়াতকে প্রধান আসামী করা হয়। অন্যান্য আসামীরা হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার রাজারামপুর এলাকার আলাউদ্দিনের মেয়ে সালে নূর বেগম এ্যানি, শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের নিশিপাড়া গ্রামের আল আমিন জুয়েল ও সদর উপজেলার বাখেরআলী বিশ্বনাথপুর গ্রামের মর্ত্তুজা আলীর ছেলে তমাস উদ্দিন।

মামলার বাদি বগুড়ার শাহজাহানপুর উপজেলার গন্ডগ্রাম গ্রামের মৃত ইমদাদুল হকের ছেলে সাব-রেজিস্টার ইউসুফ আলী মামলার আবেদনে উল্লেখ করেন, গত ১০ জানুয়ারী বেলা ৩টা ১০ মিনিটের দিকে মধ্যে সাব-রেজিস্ট্রারের এজলাস ও খাস কামরায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হায়াতের নির্দেশনায় ও তার হুকুমে হামলা হয়। এসময় সাব-রেজিস্টার কার্যালয়ের অফিসে ব্যাপক ভাংচুর চালানো হয়।

মামলার আবেদনে সাব-রেজিস্টার ইউসুফ আলী আরও উল্লেখ করেন, ঘটনার দিন বেলা ২টা ৫০ মিনিটের দিকে ইউএনও আবুল হায়াত মামলার দুই নাম্বার আসামী সালেনুর বেগম এ্যানিকে সাথে নিয়ে অফিসে এসে অবসরপ্রাপ্ত অফিস সহায়ক মৃত তালেব আলীর পেনশনের কাগজপত্রের ছাড়পত্র দিতে বলেন। কিন্তু এর সপক্ষে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে অনুরোধ করলে ইউএনও অকথ্য ভাষায় কথা বলেন। বিষয়টি জেলা রেজিস্ট্রারকে জানাতে হাতে ফোন নিলে তা কেড়ে নেন এবং কলার ধরে কিল-ঘুষি মারে ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন ইউএনও।

ইউসুফ আলী মামলার আবেদনে জানান, মারধর করে ইউএনও চলে যাওয়ার পরেও সেই মহিলাকে সঠিক কাগজপত্র না থাকায় ফিরিয়ে দিলে ইউএনও’র আনসার বাহিনী অফিসে এসে সকল সেবাগ্রহীতাদের তাড়িয়ে দেয়। পরে ইউএনওর নির্দেশে লাঠি লোহার রড ও পাইপ দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। হামলার পরদিন ১১ জানুয়ারী শিবগঞ্জ থানায় ইউএনও আবুল হায়াতের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে গেলে মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানানো হয় বলে অভিযোগ করেন সাব-রেজিস্টার ইউসুফ আলী।

বাদির আইনজীবী ব্যারিস্টার মনিরুজ্জামান আসাদ বলেন, বাদি নিজে আদালতে উপস্থিত হয়ে মামলার আবেদন করেছেন। বিচারক বাদির সকল ঘটনা ও অভিযোগ শুনেছেন। আমরা আশা করছি, আদালতে সঠিক বিচার পাব। এসময় আদালতে সাব-রেজিস্টার ইউসুফ আলীর পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন বলে জানান তিনি।

এবিষয়ে কথা বলতে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হায়াতের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন কেটে দেন।

শিবগঞ্জ থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) চৌধুরী জোবায়ের আহমেদ ঘটনার পরদিন থানায় মামলা না নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। মুঠোফোনে তিনি বলেন, ঘটনার পর থেকেই আহত সাব-রেজিস্টার এলাকায় নেই। সাব-রেজিস্টার ইউসুফ আলী থানায় আসেননি। তবে থানায় তার পক্ষে একটি মামলা গ্রহণ করা হয়েছে এবং আসামীও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, নিজ কার্যালয়ে হামলার পরদিন ১১ জানুয়ারী রাতে এ ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- শিবগঞ্জ সাব-রেজিস্টার অফিসের মহরার সাজিরুল ইসলাম, আলফাজ উদ্দিন ও রোজবুল হক। বুধবার (১১ জানুয়ারি) রাতে মোহরার মামুন অর রশিদ বাদি হয়ে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে শিবগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন।

এর আগে ১০ জানুয়ারি বিকেলে ভুক্তভোগী জনসাধারণের হামলায় আহত হন শিবগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলী। পরে অফিসের কর্মচারী ও স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। গত ২১ জানুয়ারী রামেক হাসপাতাল থেকে আহত সাব-রেজিস্টারের পরিবার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার এ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে গত ০২ ফেব্রুয়ারী ছাড়পত্র দেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।

View All


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুকে আমরা

পুরাতন খবর

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭