চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে দশটি ছোট আমগাছ নিজেরাই কেটে বিএনপি নেতার উপর দায় চাপানোর অভিযোগ উঠেছে। রোববার বিকেলে উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের গোপালনগর এলাকার হুদমা গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। বিএনপি নেতার নাম বেনু ঘোষ। তিনি উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিজেদের আমগাছ নিজেরাই কেটে বিএনপি নেতা বেনু ঘোষের উপর পরিকল্পিতভাবে যড়যন্ত্রের মাধ্যমে মিথ্যা দায় চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কোন ইস্যু না পেয়ে সাজানো ঘটনা তৈরি করা হয়েছে। বেনু ঘোষের ছেলে আতিকুল ইসলাম বলেন, গত শুক্রবার বাড়ির পাশে মোহবুলের আমবাগানে আমাদের একটি ছাগল ঘাস খেতে যায়। এ সময় মোহবুলের ছেলে শহীদ ছাগলটি ধরে নিয়ে যায়। পরে ছাগলটি আনতে গেলে আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর করে। এর কিছুক্ষণ পর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে শতাধিক ব্যক্তি আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। লাঞ্ছিত ও মারধর করা হয় নারীদের। এ সময় সাইফুল ইসলামের হাতে দেখা যায় পিস্তল। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা করি। মামলায় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরই জেরে শনিবার বিকেলে পরিকল্পিতভাবে আমগাছগুলো নিজেরাই কেটে দিয়ে আমাদের ফাঁসানোর হচ্ছে। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের জন্য থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুত নেয়া হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা ফরহাদ হোসেন বলেন, মোহবুলের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী মিলিয়ারা বেগম ও ভাতিজি সিজু খাতুন বোরকা পরে ৯-১০টি ছোট আমগাছ কেটেছেন। প্রকৃতপক্ষে আগেই মোহবুল কাটা গাছগুলোকে চিহ্ন দিয়ে রেখেছিলেন, যেন গাছগুলো ঘন ঘন হয়ে না বাড়ে। তিনি আরও বলেন, শত্রুতা করে বেছে বেছে কেউ আমগাছ কাটে না। এটি সম্পূর্ণ পরিকল্পিত সাজানো নাটক। এখন অন্যায়ভাবে বেনু ঘোষের উপর দায় চাপানো হচ্ছে। উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেন। শ্যামপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম হাতে পিস্তল নিয়ে এলাকায় মহড়া দিয়েছেন। বিএনপি নেতা বেনু ঘোষের বাড়িতে ককটেল ফাটানোর আলামত পাওয়া গেছে। সাইফুল ইসলামের কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধারের পাশাপাশি তার বিচারের দাবি জানান তিনি। গাছ কাটানোর প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রাথমিক ধারণা মোহবুলের পরিবারের লোকজনই ছোট ছোট কয়েকটি আমগাছ কেটে এদের উপর দোষ চাপানো হচ্ছে। শিবগঞ্জ থানার ওসি গোলাম কিবরিয়া বলেন, মোহবুলের পরিবারের পক্ষ থেকে গাছ কাটানোর একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে পাল্টা অভিযোগ এখনও হাতে পাইনি। পেলে দুটি অভিযোগই খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে বাড়িঘরে হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে তিন আসামিকে। অন্য আসামিদের ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।